আইনিওস অক্সফোর্ড ইনস্টিটিউট ফর অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রিসার্চের (আইওআই) গবেষকেরা নাইজেরিয়ার আটটি হাসপাতাল থেকে ১ হাজার ৩৯৬টি মাছি সংগ্রহ করেন। পরে পরীক্ষা-নিরীক্ষায় দেখা যায়, এসব মাছির শরীরে ১৭ ধরনের ব্যাকটেরিয়া রয়েছে। এর মধ্যে হাসপাতালগুলোতে সংক্রমণের প্রধান কারণ হিসেবে চিহ্নিত ‘স্ট্যাফিলোকক্কাস-অরিয়াস’ নামে একটি ব্যাকটেরিয়াও আছে।
গবেষণায় আরও জানা গেছে, মাছির শরীরে থাকা অনেক ব্যাকটেরিয়ার জিন অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধের বিরুদ্ধে টিকে থাকার ক্ষমতা বহন করছে। শুধু তাই নয়, এসবের মধ্যে এমন কিছু ব্যাকটেরিয়াও রয়েছে, যেগুলো আধুনিক শক্তিশালী অ্যান্টিবায়োটিকের বিরুদ্ধেও টিকে থাকতে সক্ষম।
গবেষণাটির প্রধান বিজ্ঞানী ড. চিওমা আচি বলেছেন, ‘মাছি মল খায়, সার খায়। যারা সংক্রমিত, তারা মলের মাধ্যমে ব্যাকটেরিয়া নির্গত করে। আর মাছি তা গ্রহণ করে হাসপাতালে বিভিন্ন পাটাতনে, খাবারে বা রোগীর শরীরে বসে সংক্রমণ ছড়াতে পারে। এটি একটি সম্ভাব্য সংক্রমণের উৎস হতে পারে।’
গবেষণার সহ-লেখক ড. কার্স্টি স্যান্ডস বলেন, ‘আমাদের গবেষণায় দেখা গেছে, হাসপাতালের ওয়ার্ডে উড়ন্ত মাছিগুলো রোগীদের জন্য সংক্রমণের ঝুঁকি সৃষ্টি করতে পারে। বিশেষ করে, যখন তারা রোগীদের শরীরে বসে।’
এ বিষয়ে এক প্রতিবেদনে বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) গার্ডিয়ান জানিয়েছে, ২০১৯ সালে নাইজেরিয়ায় অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স-জনিত কারণে ২ লাখ ৬৩ হাজার ৪০০ জনের মৃত্যু হয়েছিল। এই হার বিশ্বে ২০ তম সর্বোচ্চ।
গবেষকেরা বলছেন—হাসপাতালে মাছি, পিঁপড়া, মাকড়সা ও তেলাপোকার মাধ্যমে সংক্রমণ ছড়ানোর বিষয়টি আরও গভীরভাবে বোঝার প্রয়োজন। তারা পরবর্তী গবেষণায় দেখতে চান, জানালায় নেট লাগানো ও মশারি ব্যবহার করে হাসপাতালে সংক্রমণের হার কমানো সম্ভব হয় কি না।
নাইজেরিয়ায় চালানো এই গবেষণাটি একটি বড় আন্তর্জাতিক গবেষণার অংশ। এর মাধ্যমে বিভিন্ন দেশের হাসপাতালগুলোতে কীভাবে পোকামাকড় ওষুধ-প্রতিরোধী ব্যাকটেরিয়া ছড়াচ্ছে, তা খতিয়ে দেখা হবে।
হাসপাতালগুলোতে পোকামাকড় নিয়ন্ত্রণ ও সংক্রমণ প্রতিরোধ ব্যবস্থা জোরদার করা জরুরি। তা না হলে, সুপারবাগ সংক্রমণ বিশ্বজুড়ে আরও ভয়ংকর আকার ধারণ করতে পারে।
ডার্ক টু হোপ/এসএইচ