Publish: Friday, 18 July, 2025, 11:19 PM

ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) রাশিয়ার বৃহত্তম জ্বালানি প্রতিষ্ঠান রোসনেফ্টের ভারতীয় তেল শোধনাগারের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। সেইসঙ্গে তারা তেলের মূল্যসীমা কমিয়েছে। ইউক্রেন যুদ্ধের জেরে রাশিয়ার বিরুদ্ধে নতুন পদক্ষেপের অংশ হিসেবে ইইউ এসব পদক্ষেপ নিয়েছে।
শুক্রবার (১৮ জুলাই) ভারতের বার্তা সংস্থা পিটিআই এ খবর জানায়। এটি রাশিয়ার ওপর ব্রাসেলসের নিষেধাজ্ঞার ১৮তম প্যাকেজ, যার মধ্যে রুশ ব্যাংকের ওপর নতুন বিধিনিষেধ ও দেশটির তেল পরিশোধনাগারকে লক্ষ্যে পরিণত করা হয়েছে। বর্তমানে রাশিয়ার অপরিশোধিত তেল প্রতি ব্যারেল ৬০ ডলারে বিক্রি হয়। নতুন নিষেধাজ্ঞা চালু হলে তা আরও কমে যাবে। এর অর্থ হলো রাশিয়া ভারতের মতো ক্রেতাদের কাছে কম দামে তার অপরিশোধিত তেল বিক্রি করতে বাধ্য হবে।
অবশ্য রুশ তেলের দ্বিতীয় বৃহত্তম ক্রেতা হিসেবে ভারত এ পদক্ষেপ থেকে উপকৃত হবে। দেশটির অপরিশোধিত তেল বর্তমানে ভারতের মোট তেল আমদানির প্রায় ৪০ শতাংশ।
ইইউ পররাষ্ট্রনীতির প্রধান কাজা কালাস সামাজিক মাধ্যম এক্স-এ বলেন, প্রথমবারের মতো তারা ভারতে রুশ প্রতিষ্ঠান রোসনেফ্টের শোধনাগারের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন। নায়ারা এনার্জি লিমিটেডের ৪৯ শতাংশ শেয়ারের মালিক রোসনেফ্ট, আগে যা এসার অয়েল লিমিটেড নামে পরিচিত ছিল। নায়ারার অবস্থান ভারতের গুজরাট রাজ্যের ভাদিনারে। বছরে এটি দুই কোটি টন তেল পরিশোধন করে। ভারতজুড়ে এর ৬ হাজার ৭৫০টিরও বেশি পেট্রোল পাম্প রয়েছে।
কেসানি এন্টারপ্রাইজেস কোম্পানি নামে একটি বিনিয়োগ কনসোর্টিয়ামের ৪৯ দশমিক ১৩ শতাংশ অংশীদারিত্ব রয়েছে নায়ারায়। ইইউ নিষেধাজ্ঞার অর্থ হলো নায়ারা ইউরোপীয় দেশগুলোতে পেট্রোল ও ডিজেলের মতো জ্বালানি রপ্তানি করতে পারবে না।
কালাস বলেন, ‘আমরা শক্তভাবে দাঁড়িয়েছি। ইইউ রাশিয়ার বিরুদ্ধে এ পর্যন্ত তাদের সবচেয়ে শক্তিশালী নিষেধাজ্ঞা প্যাকেজগুলোর একটি অনুমোদন করেছে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা ক্রেমলিনের যুদ্ধ বাজেট আরও কমাচ্ছি। আরও ১০৫টি ছায়া নৌবহর জাহাজ, তাদের সহায়তাকারী জাহাজের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিচ্ছি। রুশ ব্যাংকগুলোর তহবিলের সহজলভ্যতা সীমিত করছি।’ ঘোষিত প্যাকেজে নর্ড স্ট্রিম পাইপলাইনের ওপর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।
২০২২ সালের ডিসেম্বরে জি-৭ দেশগুলো রুশ তেলের ওপর ব্যারালপ্রতি ৬০ ডলার মূল্যসীমা আরোপ করে। বিশ্বব্যাপী তেলের দাম কমে যাওয়ায় বর্তমান ৬০ ডলার মূল্যসীমা প্রায় অপ্রাসঙ্গিক হয়ে পড়ায় ইইউ ও ব্রিটেন তা কমানোর চাপ দিচ্ছিল। কালাস নতুন মূল্যসীমা নির্দিষ্ট করে জানাননি। তবে প্রাথমিকভাবে এটি ৪৫ ডলার থেকে ৫০ ডলারের মধ্যে নির্ধারণ করা হতে পারে বলে জানা গেছে।
নতুন মূল্যসীমায় ভারতের মতো আমদানিকারক দেশ লাভবান হবে। এক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের রোষানলে পড়ার ঝুঁকিও রয়েছে। গত সপ্তাহে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সতর্ক করে বলেছেন, যেসব দেশ রুশ পণ্য কিনছে, আগামী ৫০ দিনের মধ্যে রাশিয়া যদি ইউক্রেনের সঙ্গে চুক্তিতে পৌঁছাতে না পারে, তাহলে ওই দেশগুলোর ওপর নিষেধাজ্ঞা বা উচ্চ শুল্ক আরোপ করা হবে।
ডার্ক টু হোপ/এসএইচ