ফিলিস্তিনের গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর থাকলেও ইসরায়েলি বাহিনীর বিক্ষিপ্ত হামলা অব্যাহত রয়েছে। গত শুক্রবার একটি বাসে গোলাবর্ষণ করে একই পরিবারের অন্তত ১১ জন ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে ইসরায়েলি সেনারা। নিহতদের মধ্যে সাত শিশু ও তিন নারী রয়েছেন।
গাজার কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, যুদ্ধবিরতি শুরু হওয়ার পর থেকে ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় শনিবার পর্যন্ত অন্তত ৩৮ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এক প্রতিবেদেন এ তথ্য তুলে ধরেছে আল জাজিরা।
হামাস-নিয়ন্ত্রিত জরুরি পরিষেবা বিভাগের মুখপাত্র মাহমুদ বাসসাল জানান, গাজা সিটির জেইতুন এলাকায় বাস্তুচ্যুতদের বহনকারী একটি বাসে ইসরায়েলি বাহিনী হামলা চালায়। পরে উদ্ধারকারীরা বাসের ভেতর থেকে মরদেহগুলো বের করে। নিহতরা সবাই স্থানীয় আবু শাবান গোত্রের সদস্য ছিলেন। তারা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হওয়া নিজেদের বাড়িঘর দেখতে ফিরে আসার চেষ্টা করছিলেন।
এদিকে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী দাবি করেছে, বাসটি যুদ্ধবিরতি চুক্তির আওতায় নির্ধারিত ‘হলুদ লাইন’ অতিক্রম করেছিল এবং তাদের সেনাদের জন্য হুমকি তৈরি করেছিল। তাই আত্মরক্ষার্থে গুলি চালানো হয়েছে বলে দাবি তাদের।
যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর উত্তর গাজার বহু বাসিন্দা ধ্বংসস্তূপের মধ্যে নিজেদের ঘরবাড়ির সন্ধানে ফিরছেন। তবে অব্যাহত যুদ্ধ ও বিমান হামলায় গাজা নগরী প্রায় পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে যাওয়ায় অনেকেই পরিচিত জায়গা খুঁজে পেতেও হিমশিম খাচ্ছেন।
এর আগে গত সপ্তাহে গাজা সিটির শুজাইয়া এলাকায় ইসরায়েলি হামলায় ৫ জন ফিলিস্তিনি নিহত হন। এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় সংঘটিত যুদ্ধবিরতি চুক্তির অংশ হিসেবে হামাস আরও একজন ইসরায়েলি জিম্মির মরদেহ হস্তান্তর করেছে। শুক্রবার রাতে মরদেহটি ইসরায়েলে পৌঁছায়।
ইসরায়েল মিসর-সীমান্তবর্তী রাফাহ ক্রসিং এখনও বন্ধ রেখেছে এবং অন্যান্য প্রধান সীমান্ত পথেও কড়াকড়ি আরোপ করেছে, ফলে গাজায় মানবিক সহায়তা প্রবেশে মারাত্মক বাধা তৈরি হয়েছে। ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর জানায়, হামাস যুদ্ধবিরতি চুক্তির শর্ত পুরোপুরি না মানা পর্যন্ত রাফাহ ক্রসিং পুনরায় খোলা হবে না।
হামাস জানিয়েছে, তারা চুক্তির শর্ত মানতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং এখনও ধ্বংসস্তূপের নিচে পড়ে থাকা ইসরায়েলি বন্দিদের মরদেহ উদ্ধার ও হস্তান্তরের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।
যুদ্ধবিরতি শুরুর পর থেকে গাজায় তারা গড়ে দৈনিক মাত্র ৫৬০ টন খাদ্যসামগ্রী পাঠাতে পেরেছে বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি। এ পরিমাণ ভয়াবহ খাদ্য সংকটে থাকা লক্ষাধিক মানুষের চাহিদার তুলনায় খুবই কম বলে জানায় সংস্থাটি।
ডার্ক টু হোপ/এসএইচ