Publish: Saturday, 21 December, 2024, 10:59 PM
অতীতে দলীয় স্বার্থ উদ্ধারের জন্য পুলিশের কিছু সদস্য অপরাধে জড়িয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বাহিনীর প্রধান বাহারুল আলম। শনিবার (২১ ডিসেম্বর) দুপুরে সিলেট মহানগর পুলিশ (এসএমপি) কমিশনারের কার্যালয়ের সম্মেলনকক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এ কথা বলেন।
এ সময় পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম জানান, পুলিশের দায়িত্ব জনগণের সেবা করা এবং একটি সুশৃঙ্খল বাহিনী হিসেবে নিজস্ব পেশাদারিত্ব নিশ্চিত করা। এ জন্য আধুনিকায়ন ও স্বচ্ছতা আনতে রিফর্ম প্রক্রিয়ায় জোরদার করা হয়েছে।
আইজিপি বলেন, পুলিশ রিফর্মের কাজ চলছে। অতীতে দলীয় স্বার্থ উদ্ধারে পুলিশ বড় ধরনের অপরাধে জড়িয়েছে, যা অত্যন্ত লজ্জার বিষয়। আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে পুলিশকে জনগণের আস্থা অর্জনকারী একটি পেশাদার বাহিনী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করা।
সমাজের কিছু অসাধু লোক, নেতা এবং প্রভাবশালীরা নিরীহ লোকদের মামলার আসামি করছে। এটি উদ্বেগের বিষয় উল্লেখ করে পুলিশ প্রধান বলেন, যারা নিরীহ অথচ মামলায় আসামি হয়েছেন, তাদের গ্রেপ্তার করা হবে না। হয়রানি এড়াতে সঠিক তদন্তের মাধ্যমে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। একই সঙ্গে তাদের পুলিশের পক্ষ থেকে আশ্বস্ত করা হবে।
অস্ত্র উদ্ধারের বিষয়ে আইজিপি জানান, ছাত্র-জনতার আন্দোলনের পর লুট হওয়া ছয় হাজার অস্ত্রের মধ্য এখনো দেড় হাজার অস্ত্র উদ্ধার হয়নি। এসব অস্ত্র উদ্ধারে পুলিশের পাশাপাশি জনগণের সহযোগিতা প্রয়োজন।
ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় পুলিশের গুলিতে সিলেটের সাংবাদিক তুরাব নিহতের ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করে ক্ষমা চেয়ে পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম বলেন, ‘এ মামলায় সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছে পুলিশ। বর্তমান সিলেট মহানগর পুলিশ (পুলিশ) কমিশনারের প্রতি আমার তেমন নির্দেশনা দেওয়া আছে। তুরাবকে হয়তো আমরা ফিরিয়ে দিতে পারব না, কিন্তু সুবিচার পাওয়ার ক্ষেত্রে পুলিশ সর্বোচ্চটুকু করবে।’
৫ আগস্টের পর বিভিন্ন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে হামলা, ‘হুমকি ও চাঁদাবাজির বিষয়ে আইজিপি বলেন, ব্যবসায়ীদের কাছে চাঁদা চাইলে কেউ দিবেন না, ভয়ও পাবেন না। আমরা ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আছি।’
আদালত প্রাঙ্গণে আসামিদের মারধরের বিষয়ে পুলিশ মহাপরিদর্শক বলেন, ‘এই বিষয়ে আমাদের সকলকে সতর্ক থাকতে হবে। আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়া যাবে না। বিজ্ঞ আদালত অপরাধীদের বিচারের ব্যবস্থা করবেন।’
পুলিশের প্রতি মানুষের আস্থা ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে পুলিশ সংস্কার কমিশন গঠন করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা কমিশনে সুনির্দিষ্ট কিছু বিষয় সুপারিশ করেছি। বিশেষ করে বেশির ভাগ পুলিশ সদস্যকে ওভারটাইম কাজ করতে হচ্ছে। এটার জন্য তারা কোনো ভাতা পান না। এই বিষয়ে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। পাশাপাশি তাদের কর্মস্পৃহা ফিরিয়ে আনতে তাদের সমস্যা সমাধানের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। আজকে আমরা সকলকে সঙ্গে নিয়ে তাদের কথা শুনব। এ জন্যই মূলত আমার সিলেট সফর।’
সিলেট মহানগর পুলিশ কমিশনার মো. রেজাউল করিম সভাপতিত্ব এ সময় উপস্থিত ছিলেন সিলেট রেঞ্জ ডিআইজি মো. মুশফেকুর রহমান, সিলেটের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান, হবিগঞ্জের পুলিশ সুপার মো. রেজাউল হক খান, মৌলভীবাজারের পুলিশ সুপার এম. কে. এইচ. জাহাঙ্গীর হোসেন, সুনামগঞ্জের পুলিশ সুপার আ. ফ. ম. আনোয়ার হোসেন খান, এসএমপির অতিরিক্ত কমিশনার, উপকমিশনার, অতিরিক্ত উপকমিশনারসহ কর্মকর্তারা। এর আগে সিলেট রেঞ্জ ও এসএমপিসহ বিভাগের সব পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন আইজিপি।
ডার্ক টু হোপ/এসএইচ