Publish: Monday, 3 March, 2025, 11:11 PM

নিয়তের সঙ্গে সুবহে সাদিক থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত পানাহার ও সহবাস থেকে বিরত থাকা হলো রোজা। রোজার মাধ্যমে আল্লাহকে পাওয়া যায়। আল্লাহকে খুশি করা যায়। রোজা হলো তাকওয়া বা আল্লাহভীতি অর্জনের মাধ্যম। তাকওয়ার পথে অন্তরায় তৈরি করে; রোজা রেখে এমন কোনো কাজ করা যাবে না। রোজা অবস্থায় সব ধরনের গুনাহ থেকে বেঁচে থাকতে হবে। মহান আল্লাহ বলেন,‘হে মুমিনরা, তোমাদের প্রতি রোজা ফরজ করা হয়েছে যেমন ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের আগের মানুষদের প্রতি, যাতে তোমরা আল্লাহভীরু হতে পারো, পরহেজগার হতে পারো।’ (সুরা বাকারা, আয়াত: ১৮৩)
রোজা অবস্থায় সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। কোনোভাবেই গুনাহে জড়ানো যাবে না। রোজা ভেঙে যায় এমন কাজ তো করাই যাবে না; বরং রোজার মধ্যে ত্রুটি সৃষ্টি করে এমন কাজ থেকেও দূরে থাকতে হবে।
রোজা রেখে স্ত্রীর সঙ্গে মেলামেশার ক্ষেত্রেও সতর্ক থাকতে হবে। রোজা রেখে স্ত্রীকে চুমু খাওয়া বা জড়িয়ে ধরা যাবে। তবে গোসল ফরজ হওয়ার মতো পরিস্থিতি তৈরি হলে রোজা ভেঙে যাবে। রোজা অবস্থাতেও রাসুলুল্লাহ (সা.) তাঁর স্ত্রীদের চুমো খেয়েছেন। আয়েশা (রা.) বলেন, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) রোজা রেখে স্ত্রীকে চুমু খেতেন, স্ত্রীর সঙ্গে আলিঙ্গন করতেন। তিনি ছিলেন যৌনাকাঙ্ক্ষা নিয়ন্ত্রণে সবচেয়ে সক্ষম ব্যক্তি।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস: ১৮৪১)
আয়েশা (রা.) বলেন, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) চুম্বনের জন্য আমার কাছে ঝুঁকে এলে বললাম, আমি তো রোজাদার। তিনি বললেন, আমিও রোজাদার। আয়েশা বলেন, অতঃপর তিনি ঝুঁকে এসে আমাকে চুম্বন করলেন।’ (সহিহ মুসলিম, ১১০৭)
রোজা অবস্থায় স্ত্রীকে চুমু দিতে চাইলে খুব সতর্কতার সঙ্গে দিতে হবে। খেয়াল রাখতে হবে, কোনোভাবেই যেন গোসল ফরজ হওয়ার মতো পরিস্থিতি তৈরি না হয়। এমন হলে মাকরুহ হবে। এ ক্ষেত্রে যুবকদের বেশ সতর্ক থাকতে হবে। আবদুল্লাহ ইবনে আমর ইবনুল আস (রা.) বলেন, ‘আমরা নবি (সা.)-এর কাছে বসা ছিলাম। তখন এক যুবক এসে জিজ্ঞেস করলেন, হে আল্লাহর রাসুল, আমি কি রোজা রেখে চুমু খেতে পারি? তিনি বললেন, না। এরপর এক বৃদ্ধ এসে একই প্রশ্ন করলেন। তিনি বললেন, হ্যাঁ। আমরা তখন অবাক হয়ে একে অপরের দিকে তাকাচ্ছিলাম। রাসুলুল্লাহ (সা.) বললেন, আমি জানি, তোমরা কেন একে অপরের দিকে তাকাচ্ছ। শোনো, বৃদ্ধ নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন।’ (মুসনাদে আহমদ, ২ / ১৮০ ও ২৫০)
স্ত্রীকে চুমু খাওয়া বা জড়িয়ে ধরার কারণে যদি গোসল ফরজ হয়ে যায়, তবে দিনের বাকি অংশ কিছু না খেয়ে রোজাদারের মতোই কাটাতে হবে। পরে সেই রোজার কাজা করতে হবে। কাফফারা দিতে হবে না—এমনটিই বলছেন ইসলামি স্কলাররা।
ডার্ক টু হোপ/এসএইচ