দেশের বিপুলসংখ্যক মানুষ দরিদ্র না হলেও দরিদ্র্যসীমার ঠিক ওপরেই অবস্থান করছে বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ। তিনি বলেছেন, এদের অবস্থান টেকসই নয়, সামান্য ধাক্কায় তারা দরিদ্র হয়ে যেতে পারে।
সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর চীন-মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে এক সেমিনারের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
দরিদ্র্যসীমার অবস্থান তুলে ধরে ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, কিছু মানুষ নাক বরাবর পানিতে দাঁড়িয়ে আছে। সামান্য ঢেউ এলেই তারা তলিয়ে যাবে। তারা ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় কোনোভাবে শুধু জীবনধারণ করে যাচ্ছে।
ন্যায্যতাভিত্তিক সমাজে চরম দারিদ্র্য থাকতে পারে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘কোনো দেশ এত গরিব হতে পারে না যে তার সব মানুষের জন্য সে অন্তত জীবনধারণের মৌলিক চাহিদা পূরণ করতে পারবে না। এখন তো আমাদের কোনো অজুহাত দেখালে চলবে না যে আমরা সবাইকে ন্যূনতম সামাজিক নিরাপত্তা দিতে পারব না।
ফলে এই দারিদ্র্য দূর করা আমাদের অন্যতম মূল উদ্দেশ্য হিসেবে গ্রহণ করতে হবে। সেই সঙ্গে এটিকে অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক লক্ষ্য হিসেবে গ্রহণ করতে এখন থেকেই প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হতে হবে।’
সামাজিক ভাতা দেওয়ার ক্ষেত্রে উপকারভোগী নির্ধারণে বড় সমস্যা আছে জানিয়ে ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, ‘বর্তমানে যারা ভাতা পান, তাদের ৫০ শতাংশই এ সুবিধা পাওয়ার যোগ্য নন। তারা ভূতুড়ে অথবা রাজনৈতিক বিবেচনায় সুবিধা পাচ্ছেন। জাতীয়ভাবে সমন্বিত তালিকা তৈরি করা ও মাঠ পর্যায়ে তদারকি করা গেলে প্রকৃত উপকারভোগী ও যোগ্যদের নাম বের হয়ে আসবে।’
পরিকল্পনা উপদেষ্টা বলেন, দেশে কিছু দারিদ্র্যঘন এলাকা আছে। রংপুর এক সময় মৌসুমি দারিদ্র্যঘন এলাকা ছিল। এই মৌসুমি দারিদ্র্য মঙ্গা হিসেবে পরিচিত। ২০০৩-০৫ সালের দিকে মঙ্গা নিয়ে গণমাধ্যমে অনেক আলোচনা হয়েছে। আগে তো সরকার মঙ্গার কথা অস্বীকার করত। সংবাদমাধ্যমের কারণেই সরকার মঙ্গাকে স্বীকৃতি দিয়েছে এবং মঙ্গা নিরোধের জন্য অনেক কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। বর্তমানে রংপুর অঞ্চলে মৌসুমি ক্ষুধা এখন অতটা আর নেই, তবে দারিদ্র্য আছে।
দেশের আর কিছু অঞ্চলে দারিদ্র্যঘন এলাকা তৈরি হয়েছে জানিয়ে ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, নেত্রকোনা, সুনামগঞ্জ, সাতক্ষীরা ও পটুয়াখালীর মতো জেলায় নতুন এসব অঞ্চল তৈরি হয়েছে। এদের লক্ষ্য করে কর্মসূচি গ্রহণ করতে হবে।
ডার্ক টু হোপ/এসএইচ