Publish: Thursday, 4 September, 2025, 9:14 PM

বাংলাদেশে টেলিকমিউনিকেশন নেটওয়ার্ক অ্যান্ড লাইসেন্সিং পলিসি–২০২৫ অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য-প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব।
তিনি জানান, নতুন নীতির মাধ্যমে দীর্ঘদিনের অকার্যকর ও মধ্যস্বত্বভোগী নির্ভর লাইসেন্সিং ব্যবস্থা বাদ দিয়ে আধুনিক ও যুগোপযোগী তিন স্তরের লাইসেন্স কাঠামো চালু করা হয়েছে। এতে সেবার মানোন্নয়ন, কাভারেজ বৃদ্ধি এবং প্রতিযোগিতামূলক বাজার গড়ে উঠবে। একই সঙ্গে ভয়েস কল ও ডেটা সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে আনতে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হবে।
বর্তমানে বিটিআরসির অধীনে ২৬ ধরনের লাইসেন্সে প্রায় তিন হাজার প্রতিষ্ঠান কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এর ফলে সেবা ও নিয়ন্ত্রণ উভয়ক্ষেত্রে বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়েছিল। নতুন কাঠামোয় মধ্যবর্তী স্তর বাদ দিয়ে লাইসেন্সকে সীমাবদ্ধ করা হয়েছে তিন স্তরে। এর পাশাপাশি এমভিএনও, প্রাইভেট ফাইভজি, ভয়েস ওভার ওয়াইফাই, ওয়াইফাই সিক্স ও সেভেন চালুর পথ উন্মুক্ত হয়েছে।
নীতিতে অবকাঠামো খাতকে বিনিয়োগবান্ধব করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এখন থেকে টাওয়ার কোম্পানি, ফাইবার নেটওয়ার্ক ও ডেটা সেন্টার একে অপরের খাতে বিনিয়োগ করতে পারবে। একই সঙ্গে ক্লাউড ব্যবসার ক্ষেত্রেও লাইসেন্সের বাধ্যবাধকতা তুলে দেওয়া হয়েছে।
গ্রাহক সেবার মান উন্নয়নে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের ন্যূনতম গতি ১৫ এমবিপিএস এবং মোবাইল ইন্টারনেটের গতি ১০ এমবিপিএস নির্ধারণ করা হয়েছে। আগামী তিন বছরের মধ্যে দেশের ৮০ শতাংশ মোবাইল টাওয়ারে ফাইবার সংযোগ পৌঁছানোর লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। শহর-গ্রাম, পাহাড়-সমতল ও উপকূলভেদে সেবার বৈষম্য কমিয়ে সমান কাভারেজ নিশ্চিত করা হবে।
তিনি আরও জানান, অতিরিক্ত মধ্যস্বত্বভোগী কমে গেলে সরকারের রাজস্ব আয় বাড়বে। ফলে ভয়েস কল ও ডেটার শুল্ক কাঠামো শিথিল করা বা প্রয়োজনে ভর্তুকি দেওয়া সম্ভব হবে। এ ছাড়া সামাজিক দায়বদ্ধতা তহবিল ব্যবহার করে দূরবর্তী অঞ্চলে নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণে সহায়তা করা হবে।
নীতিতে বিদেশি মালিকানার ক্ষেত্রে অন্তত ১৫ শতাংশ শেয়ার স্থানীয় বাজারে ছাড়ার বাধ্যবাধকতা আনা হয়েছে। তবে এজন্য কোম্পানিগুলোকে তিন বছরের সময় দেওয়া হবে। ২০২৭ সালের মধ্যে বিদ্যমান সব লাইসেন্স নতুন কাঠামোয় রূপান্তরিত হবে।
ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব আশা প্রকাশ করেন, নতুন নীতি কার্যকর হলে টেলিকম খাতে একচেটিয়াত্ব ও অরাজকতা দূর হবে, প্রতিযোগিতা বাড়বে এবং মানুষ মানসম্মত সেবা পাবে।
ডার্ক টু হোপ/এসএইচ