হবিগঞ্জে গত ২৪ ঘণ্টায় চোরাই পথে আনা বিপুল পরিমাণ ভারতীয় গাঁজা, জিরা, ফুচকা, শাড়ী, চকলেট, ট্রাক, মাইক্রোবাস এবং বাইসাইকেল জব্দ করেছে বিজিবি। এসবের কিছু পণ্য ট্রাকের পাথরের নিচ থেকে জব্দ করা হয়। জব্দ করা চোরাচালানির মূল্য প্রায় ৪ কোটি ৬৯ লাখ ৫৪ হাজার ৫০০ টাকা।
শনিবার (৬ সেপ্টেম্বর) দিবাগত মধ্যরাতে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন হবিগঞ্জ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. তানজিলুর রহমান।
জানা গেছে, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ৫৫ বিজিবি জানতে পারে, হবিগঞ্জের বানিয়াচং উপজেলার বাঘজোর বাজার নামক এলাকায় পরিত্যক্ত এক গোডাউনের ভিতরে এক ট্রাকে ভারতীয় চোরাই মাল লোড করা হচ্ছে। অবৈধ মালামাল বানিয়াচং হয়ে মহাসড়ক পথে হবিগঞ্জ দিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে পাচার হবে। ওই সংবাদের ভিত্তিতে বিজিবি ও সেনাবাহিনীর একটি বিশেষ টহলদল আকষ্মিক যৌথ অভিযান পরিচালনা করে। অভিযান পরিচালনাকালে ঘটনাস্থল থেকে বিপুল পরিমাণ ভারতীয় শাহী জিরা ও ফুচকা ভর্তি ১টি কাভার্ড ভ্যান ও ৩টি ট্রাক জব্দ করে। যার মূল্য প্রায় ২ কেটি ৪৬ লাখ ৬২ হাজার ৫০০ টাকা। অভিযানের বিষয়টি টের পেয়ে চোরাকারবারিরা গাড়ি ও মালামাল ফেলে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে।
ওই যৌথ অভিযান ছাড়াও গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মাধবপুর উপজেলায় সীমান্ত হতে আনুমানিক ৫ কিলোমিটার বাংলাদেশের অভ্যন্তরে সাতছড়ি-চুনারুঘাট রোডের তেলিয়াপাড়া এলাকায় ও মুক্তিযুদ্ধ চত্বর নামক এলাকায় ৫৫ বিজিবির বিশেষ টহলদল পৃথক অভিযান পরিচালনা করে। এ অভিযানগুলোতে একটি হাইড্রোলিক ড্রাম ট্রাক, একটি হায়েস মাইক্রো ও সাধারণ ট্রাক তল্লাশি করে অভিনব কায়দায় লুকানো অবস্থায় ভারতীয় ফুচকা, জিরা এবং চকলেট জব্দ করা হয়। জব্দ করা পণ্যের আনুমানিক মূল্য ১ কেটি ৬১ লাখ ১৭ হাজার টাকা।
এছাড়াও ৫৫ বিজিবির কাকমারাছড়া, গুটিবাড়ী, সিন্দুরখান, মনতলা এবং হরিণখোলা বিওপি হতে সীমান্ত এলাকায় পৃথক অভিযানে ৩২ কেজি ভারতীয় গাঁজাসহ বিপুল পরিমাণ ফুচকা ও বিভিন্ন প্রকার ভারতীয় শাড়ি জব্দ করা হয়। যার আনুমানিক মূল্য ৬১ লাখ ৭৫ হাজার টাকা।
৫৫ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. তানজিলুর রহমান বলেন, দেশের সীমান্ত সুরক্ষা ও সমাজকে মাদকের ভয়াবহতা থেকে রক্ষা করতে বিজিবি সবসময় কঠোর অবস্থানে রয়েছে। সকল ধরনের চোরাচালান এবং মাদকের বিরুদ্ধে হবিগঞ্জ ব্যাটালিয়ন বিজিবি সদর দপ্তরের নির্দেশনা অনুযায়ী নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করছে। এরই ধারাবাহিকতায় সেনাবাহিনীর সঙ্গে যৌথ অভিযানে বিপুল পরিমাণ ভারতীয় পণ্য উদ্ধার করা হয়েছে। জব্দ করা সকল পণ্য ও মাদকদ্রব্য আইনানুগ প্রক্রিয়ায় হবিগঞ্জ কাস্টমস অফিসে হস্তান্তরের কার্যক্রম চলছে।
একই সঙ্গে মাদক চোরাচালানি চক্রকে শনাক্ত করতে বিজিবির গোয়েন্দা তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে। মাদক ও চোরাচালান বিরোধী সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে সীমান্তবর্তী জনগণকে সহযোগিতার আহবান জানিয়েছে বিজিবি।
ডার্ক টু হোপ/এসএইচ