বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে হামলা ও হত্যাচেষ্টার ঘটনায় ঢাকার কোতোয়ালি থানার মামলায় আওয়ামীপন্থি ৬৪ আইনজীবীর জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত। এ ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ।
সোমবার (৭ এপ্রিল) এক বিবৃতিতে দলটি উল্লেখ করে, ‘দেশের মানুষ ড. ইউনূস সরকারের (অন্তর্বর্তী সরকারের) হাত থেকে মুক্তি চায়। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ দেশের জনগণের সেই মুক্তি ও অধিকার আদায়ের সংগ্রাম করে যাচ্ছে।’
বিবৃতিতে বলা হয়, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছে যে, ‘ইউনূস সরকার রাষ্ট্রক্ষমতা দখলের পর রাষ্ট্রের সব পর্যায়ে দখলদারিত্ব কায়েম করেছে। নিজেদের আজ্ঞাবহ দাসদের বিচারক হিসেবে দায়িত্ব দেওয়ার পাশাপাশি আদালতের উপর নগ্ন হস্তক্ষেপ জারি রেখেছে। সম্পূর্ণভাবে বলপ্রয়োগ করে বেআইনিভাবে উচ্চ আদালতের বিচারকদের অপসারণ করা হয়েছে।’
এতে আরও বলা হয়, ‘মানুষ অন্যায়-অন্যায্যতার শিকার হলে বা অধিকারহারা হলে ন্যায়বিচার বা অধিকার প্রাপ্তির আশায় আদালতের দ্বারস্থ হয়। অথচ সেই আদালতকে ব্যবহার করে একের পর এক অন্যায় আদেশ দিয়ে ইউনূস সরকার ন্যক্কারজনক নজির স্থাপন করে চলেছে। উচ্চ আদালত থেকে জামিনপ্রাপ্ত আইনজীবীরা নিম্ন আদালতে জামিন প্রর্থনা করে আত্মসমর্পণ করেন। আদালত তাদের জামিন আবেদন মঞ্জুর না করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। যে আইনজীবীরা অন্যায়ের শিকার হওয়া বা অধিকার হারা মানুষের জন্য ন্যায় প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে আদালতে লড়াই করেন, সেই আইনজীবীদের ওপরই আজ আদালত চরম অন্যায় ও নিপীড়নমূলক আদেশ দিয়েছেন। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে এই আদেশের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।’
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘ইউনূস সরকার অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলের পর তাদের প্রত্যক্ষ মদতে শুধু রাজনৈতিক মতাদর্শের ভিন্নতার কারণে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ওপর হয়রানিমূলক ও প্রতিহিংসাপরায়ণ আচরণ করছে। খেলোয়াড়, শিল্পী, বুদ্ধিজীবী, সাংস্কৃতিক কর্মীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন মিথ্যা হত্যা মামলা দিয়ে হয়ারানি করা হচ্ছে। এসব মামলার অসারতা ও ভিত্তিহীনতা তুলে ধরে এসব আইনজীবী হয়রানির শিকার হওয়া জনগোষ্ঠীর পক্ষে দাঁড়াতে পারতেন। যার মধ্য দিয়ে ইউনূস সরকারের স্বরূপ জাতির সামনে প্রকটভাবে প্রকাশিত হত। সে কারণে এই অসাংবিধানিক দখলদার সরকার আদালতকে ব্যবহার করে মিথ্যা সাজানো মামলায় আইনজীবীদেরও হয়রানি করার অপচেষ্টা করছে। যার মধ্যে বয়স্ক ও নারী আইনজীবীরা রয়েছেন।’
আওয়ামী লীগ দাবি করেছে, ‘এ সরকার সব আসামির ক্ষেত্রে জামিন নিয়ে তালবাহানা করছে। জামিন প্রাপ্তির যোগ্য মানুষদেরও জামিন না দিয়ে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন মামলায় দিনের পর দিন কারাগারে আটক রাখছে। এক মামলায় জামিন পেলে অন্য মামলায় শ্যোন আরেস্ট দেখিয়ে আটক রাখার নজিরবিহীন ঘটনার উদ্ভব ঘটিয়েছে। অনতিবিলম্বে এসব আইনজীবীসহ অন্যান্যদের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক বিবেচনায় করা সব মিথ্যা ও হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহার করতে হবে এবং সব রাজবন্দির নিঃশর্ত মুক্তি দিতে হবে।’
‘সারা দেশে সরকারের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ মদতে নৈরাজ্যজনক পরিস্থিতি সৃষ্টির কারণে সমগ্র দেশটাই একটা কারাগারে পরিণত হয়েছে। দেশের গণতন্ত্রকামী মানুষ এই সরকারের করাল গ্রাস থেকে মুক্তি চায়। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ দেশের জনগণের সেই মুক্তি ও অধিকার আদায়ের সংগ্রাম করে যাচ্ছে’, যোগ করা হয় বিবৃতিতে।
ডার্ক টু হোপ/এসএইচ