চাঁদা না পেয়ে পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার চন্দ্রদীপ ইউনিয়নের মো. মানিক ব্যাপারী (৪৫) নামের এক কৃষকের তরমুজভর্তি ট্রলার ছিনতাই করার অভিযোগ উঠেছে। ওই ট্রলার থেকে ৮৬০ পিস তরমুজ লুট করে অন্য ট্রলারে করে নিয়ে গেছে দুর্বৃত্তরা।
এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে মো. মানিক ব্যাপারী (৪৫) নামে এক কৃষক বাউফল থানায় মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় মো. সাইফুল ইসলাম (৩৫) নামে ছাত্রদলের সাবেক এক নেতাসহ চার জনের নাম উল্লেখ করা হয়। এ ছাড়া আরও ২৫ জন অজ্ঞাত ব্যক্তির নাম রয়েছে।
ওই মামলায় প্রধান আসামি সাইফুলকে ওই রাতেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সাইফুল নাজিরপুর ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি। বর্তমানে যুবদলের সক্রিয় সদস্য। তার বাবা মো. এনায়েত হোসেন খান (৫৮) নাজিরপুর তাঁতেরকাঠি ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক। তাকেও ওই মামলায় আসামি করা হয়েছে।
পুলিশ, স্থানীয় চাষি ও ভুক্তভোগী কৃষকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত মঙ্গলবার ক্ষেত থেকে ৮৬০ পিস বড় আকারের তরমুজ কেটে ট্রলারে উঠিয়ে বরিশাল নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন মো. মানিক ব্যাপারী নামে এক কৃষক। দুপুর ১২ টার দিকে বিএনপি নেতা এনায়েত হোসেনের ছেলে সাইফুল দলবল নিয়ে ট্রলারের চালক মো. আরিফকে (১৮) মারধর করে চর রায়সাহেব থেকে তরমুজভর্তি ওই ট্রলারটি ছিনিয়ে নিয়ে নিমদী লঞ্চঘাটের দক্ষিণ পাশে ইটভাটার কাছে নিয়ে নোঙর করে রাখে। খবর পেয়ে কৃষক মানিক ব্যাপারী সেখানে গিয়ে ট্রলারসহ তরমুজ ফেরত চাইলে তিন লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে সাইফুল ও তার লোকজন। চাঁদা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে তরমুজ অন্য ট্রলারে উঠিয়ে নিয়ে যায় সাইফুল। পরে ছয় হাজার টাকার বিনিময়ে ট্রলার ফেরত দেওয়া হয়।
মানিক ব্যাপারী অভিযোগ করেছেন, এ বিষয়ে কাউকে জানালে কিংবা মামলা করলে তাকে খুন করে নদীতে ভাসিয়ে দেওয়ার হুমকি দেয় সাইফুল।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় যুবদলের এক শীর্ষ নেতা অভিযোগ করেছেন, সাইফুল ও তার বাবা এনায়েত হোসেনের বিরুদ্ধে দখলবাজি ও চাঁদাবাজির ব্যাপক অভিযোগ রয়েছে। বাংলাবাজার অটোগাড়ির স্ট্যান্ডের ইজারাদারকে হটিয়ে দখলে নিয়ে অবৈধভাবে টাকা তুলছেন সাইফুল। নিমদী খেয়াঘাটের ইজারাদারের টাকা ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে সাইফুলের বিরুদ্ধে। মোটকথা সাইফুল ও তার বাবার অত্যাচারে অতিষ্ঠ এলাকাবাসী। এতে বিএনপির ভাবমূর্তি চরমভাবে ক্ষুণ্ন হচ্ছে। সাইফুলকে গ্রেপ্তার করায় বিএনপি ও অঙ্গসহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরাও খুশি।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, স্থানীয়ভাবে তারা (সাইফুল ও এনায়েত) বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির নির্বাহী সদস্য ও বাউফল উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি শিল্পপতি এ কে এম ফারুক আহম্মেদ তালুকদারের পক্ষে রাজনীতি করেন।
বাউফল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. সাহাবুদ্দিন হাওলাদার বলেন, ‘সরেজমিনে ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেছে।’
বাউফল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামাল হোসেন বলেন, ‘প্রধান আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত অন্য আসামিদের খুব কম সময়ের মধ্যে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
ডার্ক টু হোপ/এসএইচ