নেত্রকোনার খালিয়াজুরি উপজেলায় জলমহালে মাছ ধরাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ চলাকালে গ্রামবাসীর ধাওয়ায় নিখোঁজ ৩ জেলের মরদেহ ধনু নদ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে।
মৃত ব্যক্তিরা হলেন- আটপাড়া উপজেলার রূপচন্দ্রপুর গ্রামের শহীদ মিয়া (৪৫), মদন উপজেলার বাগজান গ্রামের রুকন মিয়া (৪২) ও কেন্দুয়া উপজেলার রোয়াইলবাড়ি গ্রামের হৃদয় মিয়া (৩২)। এ ঘটনায় নিখোঁজ মদনের গোবিন্দপুর গ্রামের ইয়াসিন মিয়ার (২১) সন্ধান এখনও পাওয়া যায়নি।
সোমবার (১০ মার্চ) বিকেলে নদের রসুলপুর এলাকা থেকে স্থানীয় থানা-পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা মরদেহগুলো উদ্ধার করেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মাছশিকারিরা সংঘবদ্ধ হয়ে খালিয়াজুরি উপজেলার বিভিন্ন জলমহালে পলো দিয়ে মাছ শিকার করছিলেন। শনিবার সকালে জেলার বিভিন্ন উপজেলার সহস্রাধিক মাছশিকারি পলো ও লাঠিসোঁটা নিয়ে একটি জলমহালের মাছ শিকার করতে যান। এসময় রসুলপুর গ্রামের লোকজন তাদের বাধা দেন। পরে মাছশিকারিরা রসুলপুর বাজার ও গ্রামের বাড়িঘরে হামলা করেন। তখন গ্রামবাসী সংগঠিত হয়ে তাদের প্রতিহত করতে এগিয়ে এলে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়।
সংঘর্ষে দুই পক্ষের শতাধিক লোক আহত হন। পরে পুলিশ ও সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। সংঘর্ষ চলাকালে প্রতিপক্ষের ধাওয়ায় বেশ কয়েকজন মাছশিকারি প্রাণ বাঁচাতে ধনু নদে ঝাঁপ দেন। তাদের মধ্যে চারজন নিখোঁজ হন।
এদিকে এই ঘটনায় আজ সোমবার সকাল থেকেই খালিয়াজুরির লোকজন রসুলপুর এবং মদন উপজেলার লোকজন মাইকে ঘোষণা দিয়ে গোবিন্দশ্রী এলাকায় সংঘর্ষে লিপ্ত হতে একত্রিত হন। তবে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) সাহেব আলী পাঠানের নেতৃত্বে বিপুলসংখ্যক পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি শান্ত রাখে। বেলা সাড়ে তিনটার দিকে নিখোঁজ ব্যক্তিদের লাশ উদ্ধারের পর আবারও উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে পুলিশ লাইনস থেকে অতিরিক্ত পুলিশ ও নেত্রকোনা অস্থায়ী সেনা ক্যাম্প থেকে সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে রওনা দিয়েছে।
খালিয়াজুরির পুরানহাটি গ্রামের একজন বাসিন্দা বলেন, জলমহাল সরকারের কাছ থেকে ইজারা নেওয়া ছিল। শনিবার সকালে সংঘবদ্ধ চক্রটি একটি জলমহালে মাছ লুটের চেষ্টা চালালে স্থানীয় লোকজন তাদের নদী পার হতে বাধা দেন। পরে দুই পক্ষের সংঘর্ষ শুরু হয়। এ সময় প্রচুর যানবাহন ভাঙচুর ও আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। ধাওয়া খেয়ে নিখোঁজ হওয়া তিনজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
পুলিশ কর্মকর্তা সাহেব আলী পাঠান বলেন, তিনজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। খালিয়াজুরি থানার পুলিশ ছাড়াও অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। উভয় পক্ষকে বুঝিয়ে পরিস্থিতি শান্ত রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে। এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
ডার্ক টু হোপ/এসএইচ