ওয়েস্ট ইন্ডিজের আন্দ্রে রাসেল, অস্ট্রেলিয়ার টিম ডেভিড ও ইংল্যান্ডের জেমন্স ভিন্সিকে দলে ভিড়িয়ে শক্তি বাড়িয়েছিল রংপুর রাইডার্স। তবুও এলিমিনেটরে খুলনা টাইগার্সের স্পিন ঘূর্ণিতে মহাধসে পড়ে দলটি। জবাবে ৯ উইকেটের বড় জয় পেয়েছে মেহেদী মিরাজের দল। রংপুরকে বিদায় করে বিপিএলের দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে পা রেখেছে খুলনা। আগামী ৫ ফেব্রুয়ারি দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে ফরচুন বরিশাল ও চট্টগ্রাম কিংসের মধ্যকার পরাজিত দলের মুখোমুখি হবে তারা। দ্বিতীয় কোয়ালিফাইয়ারের বিজয়ী দল ফাইনালের টিকিট পাবে।
সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) হোম অব ক্রিকেট মিরপুরে ১৬ দশমিক ৫ ওভারে ৮৫ রানে অলআউট হয়েছে রংপুর রাইডার্স। জবাবে মাত্র এক উইকেট হারিয়ে ৫৮ বল বাকি থাকতেই জয়ের বন্দরে নোঙ্গর করে খুলনা।
গত দুই আসরের মত এবারও এলিমিনেটর থেকে বিদায় নিলো রংপুর। টুর্নামেন্টের প্রথম ৮ ম্যাচ জিতে প্রথম দল হিসেবে প্লে-অফ নিশ্চিত করেছিলো রংপুর। কিন্তু লিগ পর্বের শেষ চার ও এলিমিনেটরসহ টানা পাঁচ ম্যাচ হেরে বিপিএল থেকে বিদায় নিলো রংপুর।
মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ইনিংসের দ্বিতীয় বলেই উইকেট হারায় রংপুর। রান আউটের ফাঁদে পড়েন ওপেনার সৌম্য সরকার।
পরের ওভারে স্পিনার নাসুমের বলে ফিরতি ক্যাচ দিয়ে ১ রানে বিদায় নেন আরেক ওপেনার জেমস ভিন্স। ৩ রানে ২ উইকেট পতনের পর ঘুড়ে দাঁড়াতে পারেনি রংপুর।
চতুর্থ থেকে ষষ্ঠ টানা তিন ওভারে ৩ উইকেট হারায় রংপুর। ব্যাটিংয়ে প্রমোশন পেয়ে চার নম্বরে নামা মাহেদি হাসানকে ১ রানে বোল্ড করেন স্পিনার নাসুম। তিন নম্বরে নামা সাইফ হাসানকে ৪ রানে থামান মিরাজ।
নাসুম-মিরাজের সাথে উইকেট শিকারের তালিকায় নাম তুলেন পেসার হাসান মাহমুদ। মোহাম্মদ সাইফুদ্দিনকে ৮ রানে এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলেন হাসান। এতে পাওয়ার প্লেতে ১৫ রানে ৫ উইকেট হারায় রংপুর।
ষষ্ঠ উইকেটে অধিনায়ক নুরুল ও টিম ডেভিড ১৮ বলে ১৭ রানের জুটি গড়েন। নবম ওভারে ডেভিডকে থামিয়ে জুটি ভাঙ্গেন নাসুম। ১টি চারে ৭ রান করেন ডেভিড।
দলীয় ৩২ রানে ডেভিডের বিদায়ে ক্রিজে আসেন হার্ড-হিটার আন্দ্রে রাসেল। উইকেটে সেট হবার চেষ্টায় সাবধানে শুরু করেন রাসেল। কিন্তু ৯ বলে ৪ রান করে মোহাম্মদ নাওয়াজের বলে বোল্ড হন রাসেল।
১২তম ওভারে রাসেল ফেরার পর ১৩তম ওভারে জোড়া উইকেট হারায় রংপুর। লোয়ার-অর্ডার ব্যাটার রাকিবুল হাসান ও নুরুলকে শিকার করেন মিরাজ। রাকিবুল ১ এবং নুরুল ২টি চারে ২৫ বলে ২৩ রান করেন।
৫২ রানে নবম উইকেট হারিয়ে গুটিয়ে যাবার শঙ্কায় ছিলো রংপুর। কিন্তু শেষ উইকেটে নাহিদ রানাকে নিয়ে খুলনার বোলারদের উপর চড়াও হন আকিফ। ৪টি চার ও ২টি ছক্কায় ১৮ বলে ৩২ রান তুলে মুশফিক হাসানের শিকার হন আকিফ। শেষ উইকেটে ২৬ বলে ৩৩ রান পায় রংপুর। ১৬.৫ ওভারে ৮৫ রানে অলআউট হয় রংপুর। নুরুল ও আকিফ ছাড়া রংপুরের হয়ে আর কোন ব্যাটারই দুই অংকে পা রাখতে পারেননি।
মিরাজ ১০ ও নাসুম ১৬ রানে ৩টি করে উইকেট নেন। ১টি করে শিকার করেন নাওয়াজ-হাসান ও মুশফিক।
৮৬ রানের টার্গেটে খেলতে নেমে প্রথম ওভারেই ধাক্কা খায় খুলনা। রংপুরের পেসার আকিফের বলে বোল্ড হন অধিনায়ক মিরাজ। ৩ বল খেলে রানের খাতা খুলতে পারেননি আগের ম্যাচে ৫৫ বলে অপরাজিত ৭৪ রান করা মিরাজ।
দলীয় ২ রানে মিরাজকে হারানোর পর শক্ত হাতে খুলনার হাল ধরেন ওপেনার মোহাম্মদ নাইম ও অ্যালেক্স রস। পাওয়ার প্লেতে ৫১ রান পায় খুলনা। ১১তম ওভারের দ্বিতীয় বলে ছক্কা মেরে ৫৮ বল বাকী থাকতে খুলনার জয় নিশ্চিত করেন নাইম। দ্বিতীয় উইকেটে রসের সাথে ৬০ বলে অবিচ্ছিন্ন ৮৭ রানের জুটি গড়েন নাইম।
৩টি চার ও ৪টি ছক্কায় ৩৩ বলে ৪৮ রানে অপরাজিত থাকেন নাইম। ৪টি বাউন্ডারিতে ২৭ বলে অনবদ্য ২৯ রান করেন রস। আকিফ ১টি উইকেট নেন। ম্যাচ সেরা হন খুলনার নাসুম।
ডার্ক টু হোপ/এসএইচ