Publish: Sunday, 31 August, 2025, 8:33 AM

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি হামলায় একদিনে আরো ৭৭ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে কেবল গাজা নগরীতেই প্রাণ হারিয়েছেন কমপক্ষে ৪৭ জন। নিহতদের মধ্যে ১১ জন ছিলেন রুটি সংগ্রহের লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থায়। আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
ইসরায়েলের টানা বোমাবর্ষণ ও উচ্ছেদ অভিযানে গাজা নগরী ছেড়ে শত শত মানুষ নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে পালাচ্ছেন। সামান্য মালপত্র নিয়ে তারা ট্রাক, ভ্যান কিংবা গাধার গাড়িতে ভরে দেইর আল-বালাহর কাছে নুসেইরাত শরণার্থী শিবিরের পশ্চিম দিকে অস্থায়ী তাঁবু ফেলছেন। অধিকাংশ পরিবার ইতোমধ্যেই একাধিকবার বাস্তুচ্যুত হয়েছে।
বাস্তুচ্যুত মোহাম্মদ মারুফ বলেন, “আমরা রাস্তায় পড়ে আছি। কী বলব? কুকুরের মতো? না, কুকুরের চেয়েও খারাপ অবস্থায় আছি আমরা।” আরেকজন বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনি মোহাম্মদ আবু ওয়ারদা জানান, উত্তর গাজার জাবালিয়া ছেড়ে পশ্চিম গাজার দিকে যাচ্ছেন, কিন্তু কোথায় গিয়ে থামবেন তা তিনি জানেন না।
জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা (ইউএনআরডব্লিউএ) আশঙ্কা প্রকাশ করেছে, গাজা নগরী দখল ও প্রায় ১০ লাখ মানুষকে বাস্তুচ্যুত করার লক্ষ্যেই এ অভিযান চালাচ্ছে ইসরায়েল। গত শুক্রবার ইসরায়েল নগরী দখলের ‘প্রাথমিক ধাপ’ শুরু করেছে বলে ঘোষণা দেয়।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, শনিবার গাজা নগরীতে নিহতদের মধ্যে অন্তত ১১ জন রুটি সংগ্রহের লাইনে দাঁড়িয়ে ছিলেন। এছাড়া ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় আবাসিক ভবনে হামলায় আরও সাতজন নিহত হন।
আল জাজিরার সাংবাদিক হানি মাহমুদ জানান, “গাজা নগরীজুড়ে হামলা আরও বাড়ছে। ঘরবাড়ি, কমিউনিটি সেন্টার সব ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। দুর্ভিক্ষ, অনাহার আর পানিশূন্যতার মধ্যে মানুষ বেঁচে থাকার লড়াই করছে।”
আন্তর্জাতিক রেড ক্রস কমিটির প্রধান মিরজানা স্পোলজারিচ এগার বলেন, গাজার জনগণকে জোরপূর্বক উচ্ছেদ করার পরিকল্পনা “অবাস্তব ও অগ্রহণযোগ্য।”
তবে আন্তর্জাতিক নিন্দা সত্ত্বেও ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর সরকার অভিযান থামানোর কোনো লক্ষণ দেখাচ্ছে না।
২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া গাজা যুদ্ধের পর থেকে যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলকে বিলিয়ন ডলার সামরিক সহায়তা দিয়েছে এবং জাতিসংঘসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ফোরামে দায়মুক্তি দিয়ে আসছে। এ বছরের ফেব্রুয়ারিতে সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গাজা থেকে সব ফিলিস্তিনিকে সরিয়ে নেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিলেন, যা আন্তর্জাতিক মহলে ‘জাতিগত নিধন’ ও মানবতাবিরোধী অপরাধ হিসেবে তীব্র সমালোচিত হয়েছে।
ডার্ক টু হোপ/এসএইচ