“বাংলাদেশের অস্তিত্ব টিকে থাকার আর কোন দরকার নেই!” -এটা কি আপনারা কিছু বিশিষ্ট ব্যক্তি নিজেরাই সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছেন? দেশটাতো সাধারন মানুষের জন্য বড় প্রয়োজন। দেশ না থাকলে আমরা কোথায় যাব? যদি গৃহযুদ্ধ চলে বা শুরু হয়, তখন মানুষ কোথায় যাবে?
সমাজে সম্পীতি, সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক ও আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি যদি অকার্যকর হয়, - যেমন এখনকার অবস্থায় মানুষ বড় আতঙ্কিত। বিশেষ করে গ্রামে গ্রামে যে চাঁদাবাজি, দখলবাজী, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান লুট, মানুষকে ধরে নিয়ে পিটিয়ে আহত/মারাত্মক আহত করা, অসহায় মানুষের আত্মচিৎকার! - এ সব অবিচারের প্রতিকার চাওয়ার কোন যায়গা নাই।
মানুষ যতই নির্যাতিত, অত্যাচারিত বা অপমানিত হোক না কেন, পুলিশ নীরব ও অসহায়। মনে হয় তাদের কিছুই করার নেই। কারণ পুলিশ বলতে চায় যে, আপনি অত্যাচারিত বা নির্যাতিত হয়েছেন, -তাহলে নিশ্চয়ই আপনি আওয়ামী লীগের লোক! যদি আওয়ামী লীগের লোক হয়,- তাহলে কি কোন বিচার পাবেনা? আওয়ামী লীগের লোক হলে কি তাকে নিঃস্ব করে দেয়া যাবে? হত্যা করা যাবে? সমাজে হেয় প্রতিপন্ন করা যাবে?
এটা কি ন্যায়বিচার? এটা কি সবার জন্য- আইন সমান? এটা কি গণতন্ত্র? আমাদের এ দুর্দশা’র কথা কোন সংবাদপত্র প্রকাশ করে না। কোন টেলিভিশনে প্রচার হয় না? তাহলে নির্যাতিতরা কোথাও একত্রিত হয়ে প্রতিবাদ করতে পারবে না? কিছুই করতে পারবে না? তাহলে কেন লোভ দেখিয়েছেন? রাজনীতিবিদরা খারাপ, আপনারা অনেক ভালো জ্ঞানী উচ্চ শিক্ষিত, সুন্দর করে কথা বলতে পারেন ,পৃথিবীর বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েছেন। আপনাদেরকে বিশ্বাস করে জনগণ কি ভুল করেছে? তাই আপনারা কি তাদেরকে শেষ করে দিবেন? দেশটা তো আমাদের দরকার। আমাদের যাওয়ার আর কোন জায়গা নেই। কিন্তু পৃথিবীর সব বড় দেশে আপনাদের যাবার, থাকার ব্যবস্থা আছে । তাই আপনাদের কোন অসুবিধা নাই কিন্তু আমরা সাধারন জনগণরা যাব কোথায়?
সারা দেশের এখন নেতৃত্বে আছেন ৫০/১০০ জন সেরা ব্যক্তি বলে দাবিদার । আপনারা কি দেশকে শেষ করে দিবেন? আমরা যদি আপনাদের সুন্দর কথায় ভুল করে থাকি, তা’হলে আমাদেরকে কি মাফ করে দেয়া যায় না? আপনাদেরকে বিশ্বাস করে আমরা কি অপরাধ করেছি? আপনারা বলেছেন শেখ হাসিনা খারাপ, আওয়ামী লীগ খারাপ। আমরা বিশ্বাস করেছি। কারণ, কিছু বিষয় যেমন ব্যাংকিং সেক্টরে অব্যবস্থাপনা, শেয়ার মার্কেটের খারাপ অবস্থা ইত্যাদি । কিন্তু শেখ হাসিনার সময় তো বহু ফ্লাইওভার, ঢাকায় মেট্রোরেল, পদ্মাসেতু, প্রত্যেক বাড়িতে বিদ্যুৎ দেওয়া হয়েছে, গত ১৫ বছরে খাদ্য ঘাটতি হয় নি। দারিদ্রতা অনেক কমেছে, শিক্ষার হার অনেক বেড়েছে, পৃথিবীতে ১৯৩টি দেশের মধ্যে ১০টি অতি দারিদ্র দেশের মধ্যে বাংলাদেশ স্থান ছিল। আর গত ১৫ বছরে উন্নয়নশীল দেশে রুপান্তরিত হয়ে পৃথিবীর ৩৪তম অর্থনীতিক দেশ হয়েছে। আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি এখনকার তুলনায় অনেক উন্নত ছিল। এখন তো কারও কোন নিরাপত্তা নাই। তখন পুলিশের কাছে অভিযোগ দেয়া যেত কিন্তু এখন পুলিশ কোন অভিযোগ নেয় না। তখন পুলিশ কিছু টাকা নিতো - কাজও করত কিন্তু এখন? আগে যদি তারা ৫/১০ হাজার টাকা নিত আর এখন চাচ্ছে ১লক্ষ/২লক্ষ টাকা। তারা বলে বিএনপি’র লোকদের টাকা দিতে হবে।
বর্তমান সময়ে সাধারণ মানুষ বলে,- আমরা আপনাদেরকে বিশ্বাস করাতে কি পাপ হয়েছে? আমরা ভেবেছিলাম,- আপনারা আমাদের সন্তান। দেশ বিদেশে আপনাদের অনেক সুনাম। আমাদের সাথে প্রতারণা করবেন না কিন্তু এখন দেখছি রাজনীতিবিদরা যদি ১০ টা অসত্য কথা বলে আপনারা বলেন ৯০ টা । আপনারা বলেন, ওরা দেশ ধ্বংস করেছে কিন্তু দেখি তাঁরা আমাদের অনেক উন্নতি করেছে আর এখন আপনারা ধ্বংস করছেন। শেখ হাসিনা যখন ক্ষমতায় ছিল তখন যদি গ্রামে চাঁদাবাজি, দখলবাজি, মিথ্যা মামলা, মারধর ও মানুষ অপমানীত হত ৫টা, এখন হয় ৫০০টা। ঢাকায় ইউনুস সাহেবের সরকার আর গ্রাম-উপজেলায় বিএনপি’র সরকার। গ্রামে বিএনপি'র টোকাইদের নেতৃত্বে অত্যাচার চলছে। বিএনপির নেতারা বলে টোকাইরা তাদের কথা শুনেনা। এখন আমরা কার কাছে যাবো? আওয়ামীলীগের লোকেরাত স্ব স্ব এলাকায় নেই, পালিয়ে বেড়াচ্ছে। এখন আমরা কার কাছে যাব? এখন মনে হচ্ছে আমাদের রাজনীবিদরাই হাজার গুনে ভালো । আপনারা তাদের সম্পর্কে অনেক অতিরঞ্জিত ও বানোয়াট কথা প্রচার করে আমাদেরকে তাদের বিরুদ্ধে ক্ষেপিয়ে তুলেছেন। আর আমরাও বোকার মত আপনাদের ষড়যন্ত্রে পা দিয়েছি। দয়া করে আপনারা চলে যান। আপনাদের তো অনেক দেশ আছে- সাথে আপনাদের গুটি কয়েক তথাকথিত সমন্বয়কদের সাথে নিয়ে যান।আমাদেরকে আমাদের মত বাঁচতে দিন।